জীবনযাপনে যদি একটু পরিবর্তন আনা যায়, স্বাস্থ্যকর করা যায়, তাহলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।





নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক এক আয়োজনে ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ রুবাইয়া পারভীন রীতি। তিনি বলেন, নিয়মিত হাঁটতে হবে।





হাঁটার ব্যাপারটা আমি এ জন্য বলছি, আপনাকে ঘাম ঝরিয়ে এক ঘণ্টা হাঁটতে হবে। বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে, যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের আদার্স কোনো কপ্লিকেশন আছে কি না।





কারণ, অনেক সময় দেখা যায় যে যাঁদের ডায়াবেটিস থাকে, তাঁদের আবার হার্ট ডিজিজও হয়ে যায়, কিডনিতে সমস্যা হয়, ব্রেনের প্রবলেম থাকে। তো সেই ব্যাপারটাও কিন্তু লক্ষণীয়। সে ক্ষেত্রে সকালে অবশ্যই টাইমমতো নাশতা করতে হবে।





সকালের নাশতায় আপনারা রাখতে পারেন লাল আটার রুটি, সাথে মিক্সড ভেজিটেবল রাখবেন। কারণ, ভেজিটেবলে লো জিআই আছে। এটা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী।





এর মধ্যে হাই-ফাইবার থাকার কারণে হেলথের জন্য ভালো কাজ করে এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আর ডায়াবেটিস পেশেন্ট প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে পারবেন।





পুষ্টিবিদ রুবাইয়া পারভীন রীতি বলেন, মধ্য-সকালে আরেকটা খাবার খেতে হবে। কারণ, আমরা বলে থাকি, ডায়াবেটিস পেশেন্টকে খাবার পাঁচ থেকে ছয় ভাগে ভাগ করে দিতে হবে এবং যেটা করতে হবে, তিন-চার ঘণ্টা পরপর খেতে হবে।





মধ্য-সকালে আপনি খেতে পারেন টকজাতীয় ফল। যাঁদের চায়ের অভ্যাস আছে, তাঁরা গ্রিন টি অথবা আদা চা পান করতে পারেন। একটু লেবু দিয়ে পান করবেন। আমি ডায়াবেটিস পেশেন্টদের বলব, যাঁরা স্যাকারিন-জাতীয় কোনো কিছু খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের বলব এটি অ্যাভয়েড করার জন্য। কারণ, এটি অনেক সময় কিডনিতে সমস্যা করে থাকে।





রুবাইয়া পারভীন রীতির পরামর্শ, লাঞ্চের ক্ষেত্রে অনেকেই একটু কনফিউজড থাকে—আমার তো ডায়াবেটিস রয়েছে, আমি ভাত খেতে পারব কি না। অবশ্যই আপনি ভাত খেতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে দেখতে হবে আপনি কতটুকু পরিমাণে ভাত খাচ্ছেন।





এখানে ভাতের ক্ষেত্রে ব্যাপার আছে। যেমন চালে যতটুকু জিআই থাকে, তার চেয়ে যখন… চালটা ফোটানো হচ্ছে, তখন কিন্তু এর জিআই আরও বেড়ে যায়। তো সে ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটাও লক্ষণীয়… সে ক্ষেত্রে বলব অতিরিক্ত পরিমাণে সেদ্ধ ভাত না খেতে,





একেবারে নরম ভাত না খেতে। হাফ নরম থাকবে, এমন ভাত খাওয়ার কথা বলব। আর যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা যেটা করবেন; একটু ভেজিটেবল প্লাস সালাদ, টকজাতীয় ফল বেশি করে খাবেন। তাহলে এটি আপনার হেলথের জন্য যেমন কাজ করবে, আপনার ব্লাড সুগার কিন্তু সহজে নিয়ন্ত্রণে আসতে সাহায্য করবে।
রাতের খাবারের ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদ রুবাইয়া পারভীন রীতির পরামর্শ, ডিনারে আপনি চাইলে মিক্সড ভেজিটেবল স্যুপ খেতে পারেন। যেটার সাথে একটু হয় চিকেন থাকবে, না হয় ডিম থাকতে পারে। এটাও আপনার হেলথের জন্য ভালো কাজ করবে।
রাতে ঘুমানোর আগে, বিশেষ করে এক ঘণ্টা আগে আপনি যদি ছোট এক বাটি টকদই বা এক গ্লাস দুধ পান করেন, যেটা কিনা সর বাদে, সেটা কিন্তু আপনার হেলথের জন্য ভালো কাজ করবে। এবং যেটা বলব, নিয়মিত আপনাকে ব্লাড সুগারটা টেস্ট করতে হবে, যে কত আছে। তাহলে আপনি ব্লাড সুগার সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।